ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জন্য ত্রাণবাহী নৌমিশনে অংশ নেওয়া সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ ১৫৬ অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল আই ২৪ নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রিসের নাগরিক এবং গ্রেটাসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে একটি বিশেষ বিমানে করে গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে পরিচিত এই মিশনে অংশ নিয়েছিল ৪৩টি নৌযান। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের এক বন্দর থেকে তারা গাজার দিকে যাত্রা শুরু করে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে যাত্রা করেছিল এই বহর। মিশনটি আয়োজন করে ফিলিস্তিনপন্থী চারটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC)।
এই অভিযানে ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী, সাংবাদিক এবং স্বেচ্ছাসেবীরা। সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থানবার্গ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও ছিলেন এই বহরের অংশ।
গত বুধবার রাতে প্রথম ধাপে ১৩টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। এরপরও অবশিষ্ট ৩০টি নৌযান গাজার দিকে এগিয়ে যায়। সবচেয়ে অগ্রসর নৌযান ছিল পোল্যান্ডের ‘ম্যারিনেত্তি’। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ওই সব নৌযানও আটক করে ইসরায়েলি সেনারা এবং অভিযাত্রীদের আশদোদ বন্দরে আটক করে রাখা হয়।
আই ২৪ নিউজ জানায়, আটককৃতদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে গ্রিসে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আর বাকিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক অবস্থায় গ্রেটা থানবার্গকে ইসরায়েলে সুইডেনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়। তখন তিনি জানান, তাকে ছারপোকায় ভরা একটি সেলে রাখা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না।
এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, তাকে জোর করে ইসরায়েলের পতাকাকে চুমু দিতে এবং সেই পতাকা ধরে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়। অভিযাত্রী দলের সদস্য ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো ডি’ আগুস্টিনো গার্ডিয়ানকে বলেন, 'আমাদের সামনে গ্রেটাকে হামাগুড়ি দিতে, পতাকায় চুমু খেতে এবং সেটা গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।' সূত্র: আই ২৪ নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান, আনাদোলু এজেন্সি
দেশবার্তা/একে