মাত্র কিছুদিন আগে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনে (পিডিবিএফ) সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে যোগ দিয়েছিলেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কাদুটি গ্রামের শাহ জালাল। নিজের মেধা, চেষ্টা ও সাধনার মাধ্যমে পাওয়া চাকরির রঙ এখনও পরিবারে লেগে ছিল, মেহেদির রংও মুছে যায়নি হাতে—এরই মধ্যে ঘটে যায় মর্মান্তিক এক ঘটনা।
চাঁদপুরে কর্মরত অবস্থায় গত ৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুপুরে হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান শাহ জালাল। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ৩০-এর কোটায়। এই ঘটনায় পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। একইসঙ্গে শোকাহত হয় পিডিবিএফ পরিবারও।
জানা গেছে, শাহ জালাল কাদুটি গ্রামের কৃষক অলি উল্লাহর ছেলে। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। সদ্য শেষ করা পড়াশোনা শেষে গত ৪ সেপ্টেম্বর চাকরিতে নির্বাচিত হন এবং ১০ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলায় কর্মস্থলে যোগদান করেন। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন বরুড়া উপজেলার ধনিশ্বর গ্রামের মেয়ে তামিমা আফরিনকে।
তবে সবকিছু শুরু হতেই না হতেই থেমে গেল শাহ জালালের জীবনযাত্রা। তার অকাল মৃত্যু হৃদয়ে গভীর দাগ কেটে যায় পরিবারের পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের সহকর্মীদের মধ্যেও।
শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে শনিবার (১১ অক্টোবর) পিডিবিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও যুগ্ম সচিব মো. মাহমুদ হাসান ছুটে যান শাহ জালালের গ্রামের বাড়ি চান্দিনার কাদুটিতে। সেখানে তিনি শাহ জালালের পিতা অলিউল্লাহ এবং স্ত্রী তামিমা আফরিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
এ সময় মো. মাহমুদ হাসান তামিমার চাকরির বিষয়েও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় শোকাহত পরিবারকে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পিডিবিএফ-এর যুগ্ম পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন তালুকদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সল আল নূর, পিডিবিএফ-এর উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মামুনুর রশিদ, কুমিল্লা অঞ্চলের উপপরিচালক শফিকুল আলম, চান্দিনা উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা সৈয়দ হাবিবুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাছিমা আক্তার প্রমুখ।
পরবর্তীতে, পিডিবিএফ প্রতিনিধিদল শাহ জালালের কবর জিয়ারত করেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
প্রতিনিধি/আরএইচ