ই-পেপার |  ঢাকা, বাংলাদেশ  |  মঙ্গলবার | ১১ নভেম্বর ২০২৫ | ২৭ কার্তিক ১৪৩২ 
https://thedailydeshbarta.com/ad/1756793693_Self-1.jpg
https://thedailydeshbarta.com/ad/1756793710_Self-2.jpg

সর্বশেষ আপডেট: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২০:০০
চলমান বার্তা:
সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়া
রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা গড়তে চান তারেক রহমান
সালেহ্ বিপ্লব
প্রকাশ: সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১৮:১৫  (ভিজিটর : )

প্রায় দুই দশক পর গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি বর্তমান রাজনৈতিক ইস্যু, নির্বাচন ও ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি কাউকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেননি, কাউকে কোনো আক্রমণ করেননি, বরং রাজনীতিতে ইতিবাচক ও গঠনমূলক ধারা চালুর বার্তা দিয়েছেন। তারেক রহমানের ভাষায়, ‘আমরা চাই, দেশের রাজনীতি হোক প্রতিযোগিতামূলক কিন্তু তা যেন হয় নীতিনিষ্ঠ ও ভদ্রতার সীমার মধ্যে। জনগণের আস্থা ফিরে পেতে হলে রাজনীতিতে ঘৃণা নয়, সহযোগিতা ও দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দিতে হবে।

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারকে ঘিরে নেতাকর্মীরা যেমন উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন রাজনীতিসংশ্লিষ্ট অনেকেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সাক্ষাৎকারে দেখা গেছে তারেক রহমান রাজনৈতিক আলাপ চালাতে চান যে পথে সেটি ‘নেতিবাচক আক্রমণ’ নয়, বরং সম্মিলিত আলোচনার পথ। প্রতিপক্ষকে সরাসরি টার্গেট করার পরিবর্তে তিনি বার্তা দিচ্ছেন যে, দলের ভাবমূর্তি ও জনসংযোগকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

বিশ্লেষকরা এও বলছেন, এটি একটি কৌশলী দৃষ্টিভঙ্গি। বিরোধিতায় প্রবল উত্তেজনা না বাড়িয়ে, ইতিবাচকভাবে আলোচনা ও প্রস্তাবের দিকেই মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। বিশেষ করে ভোটার-মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলে এ ধরনের সুর একটি নতুন রাজনৈতিক রূপ দিতে পারে।

তারেক রহমানের এ বক্তব্য বিএনপির জন্য নতুন দিকনির্দেশনা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, নেতিবাচক ভাষা পরিহার করে ইতিবাচক রাজনীতির বার্তা তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে। তাদের মতে তারেক রহমানের এই টোন আসলে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি। এটি পথ দেখাচ্ছে যে, বিএনপি সংঘাত নয়, সংলাপ চায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারকে শুভ সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি প্রশংসা করে বলেছেন, সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে শব্দচয়ন করেছেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সকালে উঠে বিবিসি বাংলার লাইভ শুনেছি। তারেক রহমান অত্যন্ত গাইডেড কথা বলেছেন। শব্দগুলো একটা থেকে আরেকটা আলাদা করে বলার চেষ্টা করেছেন। কেউ যেন চাইলেও এক শব্দকে আলাদাভাবে ব্যবহার করে ভিন্ন অর্থ তৈরি করতে না পারে। তার এ সাক্ষাৎকার শুভ সূচনা। আমি এটাও মনে করি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন। ফলে তিনি যে কথা বলবেন, যে স্পিরিট শো করবেন, সেটা জাতির জন্য শিক্ষণীয়। এটা আমার অভিমত।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের ক্যালকুলেট ওয়েতে কথা বলতে হয়। বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের আগে সম্ভবত তিনি প্রফেশনাল অ্যাডভাইস নিয়েছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। বিবিসি বাংলার সঙ্গে তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সেটা নিঃসন্দেহে ইতিহাসে দলিল হিসেবে থেকে যাবে। তারেক রহমান অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে শব্দচয়ন করেছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। তিনি চেয়েছেন তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি না হয়। প্রাথমিকভাবে মনে হয়ে গুড স্টার্ট। বাকিটা সময় বলে দেবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৬ বছর আমরা যে প্রতিহিংসার রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেখেছি, সেই পুরোনো ধারার রাজনীতি, হিংসার রাজনীতি এখন চলবে না, এটা বিএনপি বুঝতে পেরেছে। যার কারণে অনেকগুলো বিষয়ে তারা অন্যদের থেকে এগিয়ে ছিল। যেমন বিএনপি সবার আগে সংস্কারের কথা বলেছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে পরিষ্কার করে বলেছেন যে, আজ রাজনৈতিক ভেদাভেদ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যে সংস্কৃতি সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি, চুরি এবং নানা অপকর্মের কারণে ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পরে জেলে যেতে হয়, নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়। এগুলো তাদের কর্মের ফল। কিন্তু তারেক রহমান বলেছেন, জনগণই সবচেয়ে বড় বিচারক। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তিনি।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গত এক বছর আমরা জুলাই আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ নিয়ে অনেক কথা শুনে আসছি। সেই ইস্যুতে তারেক রহমান বলেছেন, ‘মাস্টারমাইন্ড’ তো কোনো ব্যক্তি হতে পারেন না। জুলাই আন্দোলনে ব্যক্তি ছিল না আসলে। ৫ আগস্টের আগে কোনো ব্যক্তির কারণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ আন্দোলনে গিয়েছে? আওয়ামী লীগের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ২০২৪ সালে আন্দোলন করেছে। সুতরাং তারেক রহমান বলেছেন, মানুষই মাস্টারমাইন্ড, নাগরিকরাই মাস্টারমাইন্ড। দুটো কথাই গুরুত্বপূর্ণ, জনগণ বিচারক আর মানুষই মাস্টারমাইন্ড।

কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির পরিবর্তনের জন্য বিএনপির যে আগ্রহ, সেটার প্রতিফলন তারেক রহমানের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে। এটা রাজনীতির নতুন মাত্রা বলে আমি মনে করি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান দৈনিক দেশবার্তাকে বলেন, মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি করতে চান। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি কোনো পক্ষকে নিয়ে কটূক্তি করেননি। 

ফেসবুকে নীল চৌধুরী লিখেছেন, তারেক রহমান একজন প্রকৃত নেতার মতো কথা বলেছেন। তিনি কখনোই নিজের কৃতিত্বকে জাহির করতে চাননি বরং ঐতিহাসিক ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের সব কৃতিত্ব জনগণকে দিয়েছেন। হ্যাটস অফ, লিডার।

সোহেল রানা লিখেছেন, ইনশাআল্লাহ, আপনার প্রতি আস্থা ফিরে পেলো। আশ্বস্ত হতে পারলাম জিয়াউর রহমানের আদর্শ আপনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। লিডার লিডারের মতোই জবাব দিয়েছেন। আপনার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। আসা রাখি কৃষি কাজের প্রতি বিশেষ নজর রাখবেন। কৃষক হাসলে দেশ হাসবে ইনশাআল্লাহ।

মেসবাহ উদ্দিন খান মিঠু লিখেছেন, তারেক জিয়া সাহেব তার পরিবারের উপর ঘটে যাওয়া বিগত সরকারের যে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এই দেশের জন্য তাদের পারিবারিক সেক্রিফাইস তা দেশের মানুষ চিরদিন মনে রাখবে এবং ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির পক্ষে এক ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে এর প্রতিদান দেবে।

মো. আরশে আজিম আরিফ লিখেছেন, মাশাআল্লাহ! দৃঢ় নেতৃত্ব, অনন্য প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার মিশেলে জনাব তারেক রহমান আজ নতুন বাংলাদেশের আশা ও প্রেরণার প্রতীক। তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে ন্যায়ভিত্তিক, জনগণের বাংলাদেশ। মহান আল্লাহ তাঁকে সুস্থ রাখুন, দীর্ঘায়ু দিন ও বিজয়ের পথ প্রশস্ত করুন।

আল-আমিন হোসাইন রুবেল লিখেছেন, তারেক রহমানের পুরো সাক্ষাৎকারটি দেখে মনে হলো বিবিসির সাংবাদিক সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তারেক রহমানকে প্রশ্নবানে ধরাশায়ী করার জন্য। কিন্তু দেশনায়ক তারেক রহমান এতো চমৎকারভাবে, গুছিয়ে তথ্য-উপাত্ত সহ সকল প্রশ্নের উত্তর দিলেন তাতে সাংবাদিক নিজেই ধরাশায়ী হয়ে গেলো। ওই সাংবাদিকের কন্ঠস্বর একপর্যায়ে ক্ষীণ হয়ে আসলো। একজন নেতা কেমন সম্মোহনী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিদীপ্ত ও মেধাবী নেতৃত্ব হলে সাক্ষাৎকারে সাংবাদিককে ধরাশায়ী থেকে শুরু করে জনগণ ও নেতাকর্মীদের উদ্দীপ্ত করতে পারেন তা তারেক রহমানের এ বিশেষ সাক্ষাৎকারে ফুটে ওঠে। আমি দেশনায়ক তারেক রহমানকে যতই দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি। গর্ব করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী আমার নেতা ও আগামীর বাংলাদেশের অবশ্যম্ভাবী প্রধানমন্ত্রী দেশনায়ক তারেক রহমান। আমরা আমাদের নেতাকে নিয়ে গর্বিত।

দেশবার্তা/এসবি/আরএইচ
মতামত লিখুন:
আরও পড়ুন 
নির্বাচিত সংবাদ
বিএনসিসি সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বিএনসিসি সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ইসলামাবাদে আদালত ভবনের বাইরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ
ইসলামাবাদে আদালত ভবনের বাইরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ
ঢাকার ১০ পয়েন্টে গুম-খুন-লুটপাটবিরোধী প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও ‘জুলাইয়ের গান’
ঢাকার ১০ পয়েন্টে গুম-খুন-লুটপাটবিরোধী প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও ‘জুলাইয়ের গান’
স্বত্ব © ২০২৫ দেশ বার্তা | সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী তোফায়েল আহমদ।
https://thedailydeshbarta.com/ad/1756793725_Self-3.jpg
https://thedailydeshbarta.com/ad/1756793740_Self-4.jpg