দীর্ঘ ৩৫ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো সপ্তম চাকসু, হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে বড় কোনো অনিয়ম ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছিল কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয় ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি বুথ। ভোটগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়া ১৪টি এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি প্রদর্শন করা হয়, যদিও দুপুরে সাময়িকভাবে কিছু স্ক্রিন বন্ধ থাকার অভিযোগ ওঠে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা চলছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, চাকসুর ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী এবং হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদে লড়ছেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।
এবারের নির্বাচনে অংশ নেয় ১৩টি প্যানেল, যার মধ্যে রয়েছে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, স্বতন্ত্র, বাম, বৈচিত্র্য ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও সুন্নিপন্থি শিক্ষার্থীদের ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’।
দীর্ঘ বিরতির পর নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা। তারা জানান, এতদিন পর নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে তারা উচ্ছ্বসিত।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় ছিল পুলিশ, সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা দল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী।
শহরে অবস্থানরত প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে আনার সুবিধার্থে বাড়তি শাটল ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থাও করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় তা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এ পর্যন্ত মাত্র ছয়বার অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এবার সপ্তমবারের মতো হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
প্রতিনিধি/একে