জীবনে বহুবার পরীক্ষা আসে কিন্তু জীবন একবারই আসে। একজন শিক্ষার্থী প্রতিটি শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে অধ্যয়ন করে। এমনি করে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে। পেশায় যোগ দেওয়ার জন্য আবারও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু নিজের জীবনের জন্য পরীক্ষা দেয়নি কখনো। শিশুর বা শিক্ষার্থীর জীবনের পরীক্ষা দিয়েছেন আমাদের মা। তিনি দশ মাস দশদিন পেটে ধারণ করেছেন। মা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষার কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন এক বা একাধিকবার।
তাই নিজের ব্যর্থতায়, অপারগতায় মায়ের কাছেই যাও। মায়ের সান্ত্বনা তোমাদের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। শিক্ষকদের কাছে যাও, শিক্ষকদের পরামর্শ তোমাদের জীবনে অনেক বড় পুরস্কার।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই জানো আগামী ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার এসএসসি, দাখিল ও সমমানের ২৫ সালের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে। এতে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। কেউ কেউ অকৃতকার্য হবে আবার অনেকেই কৃতকার্য হবে। কৃতকার্যদের জন্য অভিনন্দন এবং অকৃতকার্যদের দোয়া। অকৃতকার্যরা ভাববে না এখানেই সব শেষ। জীবন অ.....নে..... ক বড়। জীবনকে উপভোগ করবে। জীবন থাকলে পরীক্ষা আসবে। কিন্তু তোমরা যদি জীবনই বিপন্ন করো তাহলে তো সব শেষ। একটা পরীক্ষার রেজাল্টের উপর জীবনের সব কিছু নির্ভর করে না। অতএব জীবন বাঁচিয়ে রাখো একদিন না একদিন ভালো ফল পাবেই।
কিন্তু গত বছর গুলোর অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আমাদের অনেক অভিভাবক আছেন যাঁরা শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্যতাকে মেনে নিতে পারেন না সান্ত্বনা দেওয়ার পরিবর্তে বকাঝকা করেন। এতে শিক্ষার্থীর কষ্টের ভার বাড়ে। নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবন ধ্বংসের পথ বেছে নেয়। আমরা কিছুতেই শিক্ষার্থীদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিবো না। কদাচিৎ শোনা যায় শিক্ষকের তিরস্কারও শিক্ষার্থীর জীবন বিপন্নের কারণ হয়েছে।
অনেক সময় বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের নেতিবাচক আচরণও শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীদের উপর পিতামাতা, শিক্ষক ও আত্মীয়স্বজনদের অতিরিক্ত প্রত্যাশাও তাদের মানসিক চাপের কারণ হয়। আমরা সকলেই এমন আচরণ উচ্চারণ থেকে বিরত থাকবো। শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের ফল বা রেজাল্ট মেনে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করবো। অনেকগুলো জীবন বাঁচাবো এবং সুস্থ ভাবে বাঁচার প্রেরণা যোগাবো।
লেখক: শামসুদ্দীন শিশির