সড়ক দুর্ঘটনায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী (জারীকারক) মো. জমিরুল হক জুয়েল এবং মো. সবদর আলীর মৃত্যুতে ঘাতক চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।
রোববার সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জেলা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংস্থাপন শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মৌসুমী চক্রবর্তী, নেজারত শাখার উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম, চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারী ও এসোসিয়েশন সুনামগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, নেজারত শাখার প্রসেস সার্ভার জ্যোতির্ময় সরকার কেশব প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের জেলা প্রশাসক পরিবারের প্রতিটা মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের যে দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন, তারা আমাদের সবার কাছে প্রশংসনীয় ছিল। সুনামগঞ্জ—সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই ধরনের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, মায়ের বুক খালি হচ্ছে। নেশাগ্রস্ত এবং অদক্ষ চালকদের কারণেই সুনামগঞ্জ—সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমাদের সহকর্মীদের হারিয়ে আমরা কষ্ট পাচ্ছি, কিন্তু তাদের সন্তান এবং পরিবারের মনে যে কষ্ট সেটা বুঝানোর ভাষা আমাদের নেই। কেন সুনামগঞ্জ—সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করা হোক উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ঘাতক চালককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা বলেন, অদক্ষ চালক, নেশাগ্রস্ত চালকদের কেন লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই অদক্ষ এবং নেশাগ্রস্ত চালকদের দিয়ে যেন গাড়ি চালাতে দেয়া না হয়, সেদিকে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দিতে হবে।
এসময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আমাদের জুয়েল এবং সবদর আলীর পরিবারের সদস্যরা যেন দুইবেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে জীবন যাপন করতে পারে, তারা যেন অনাহারে না থাকে— সেদিকে আমাদের জেলা প্রশাসন পরিবারের অভিভাবক জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইালয়াস মিয়া সর্বদা নজর রাখবেন বলে বক্তারা আশা প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে সহকর্মীদের স্মৃতি তুলে ধরে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ—সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস এলাকায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট করের সংঘর্ষে মোটরসাইকেলের আরোহী দোয়ারাবাজার উপজেলার সাউদেরগাঁও গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে জমিরুল হক জুয়েল এবং সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ময়নার পয়েন্টের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. সবদর আলীর মৃত্যু হয়। তারা দুজনেই সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জারীকারক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।