নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে বাংলা ভাষার কবি ও লেখক কাজী জহিরুল ইসলামকে নিয়ে আয়োজিত হয়েছে ‘অথর্স টক’ এবং বুক সাইনিং অনুষ্ঠান।
গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ফ্লাশিংয়ের আইআরসি ভবনের সভাকক্ষে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে লাইব্রেরি ম্যানেজার কিলুসান বাউতিস্তা স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বাংলা ভাষার লেখকদের লাইব্রেরির অথর্স টক সিরিজে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে লাইব্রেরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরশিয়া হোসেন কবি কাজী জহিরুল ইসলামের জীবনের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়ে শোনান।
মূল অনুষ্ঠানে আরশিয়া হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় লেখক সাক্ষাৎকার। এতে কাজী জহিরুল ইসলাম তার সাহিত্যযাত্রার গল্প শোনান এবং রামায়ণ, মহাভারত থেকে শুরু করে পিবি শেলি, জালালুদ্দিন রুমি, এজরা পাউন্ড, জীবনানন্দ দাশ, কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
এরপর শুরু হয় দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব। বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে নানা প্রশ্ন করলে তিনি ধৈর্যের সঙ্গে উত্তর দেন। উত্তরের ফাঁকে ফাঁকে তিনি গল্প শোনান, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এসময় তিনি বলেন, মানুষ অর্থ ও ক্ষমতাকে সম্মান করে বলে সবাই বিত্ত আর প্রভাব অর্জনের চেষ্টা করে। অথচ যদি আমরা সততা ও নৈতিকতাকে সম্মান দিতাম, তবে সবাই সেই গুণ অর্জনের দিকে মন দিত। পৃথিবী ভুল পথে হাঁটছে, এই ধারা বদলানো জরুরি।
অনুষ্ঠানের শেষে অনুষ্ঠিত হয় বই স্বাক্ষর (বুক সাইনিং) পর্ব।
কাজী জহিরুল ইসলাম সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ও কথাশিল্পী। তিনি ৯৬টি গ্রন্থের রচয়িতা এবং বাংলা সাহিত্যে ক্রিয়াপদহীন কবিতার প্রবর্তক। বিশ্বশান্তি ও আধ্যাত্মিক জাগরণের জন্য তিনি ২০২৩ সালে নিউইয়র্কের শ্রী চিন্ময় সেন্টার থেকে “পিস রান টর্চ বিয়ারার অ্যাওয়ার্ড” পান। এর পাশাপাশি দেশ-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
বাংলা কবিতায় তার অবদানকে আল মাহমুদ, আবদুল মান্নান সৈয়দসহ বহু কবি-সাহিত্যিক উচ্চ প্রশংসা করেছেন। তার কবিতা ইতোমধ্যে উড়িয়া, সার্বিয়ান, আলবেনিয়ান ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
পেশায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা হলেও তিনি শিল্প-সাহিত্যে নিরন্তর সক্রিয়। এক যুগ আগে তার উদ্যোগে গড়ে ওঠা সংগঠন ঊনবাঙাল বর্তমানে নিউইয়র্কের অন্যতম সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।