বিশ্বনাথের দেওকলস দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ফখরুল আহমদ মতছিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। তারা বলছেন, মতছিনের অনিয়মের কারণে স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য, অভিভাবক ও এলাকার বাসিন্দারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এম এন ইসলাম খান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি দেশের সেরা হাই স্কুল হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, বিগত সরকারের সময়ে বিদ্যালয়টির গভর্নিং বডির সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের বিশ্বনাথ উপজেলার সহসভাপতি ফখরুল আহমদ মতছিন। তার অসততা, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটির সকল অর্জন ম্লান হয়ে পড়ে। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হয়েও অবৈধভাবে সভাপতির পদ ধরে রাখা ও দায়িত্ব পালন করেন মতছিন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, পলাতক আসামি হয়েও প্রায় ৩ বছর মতছিন অবৈধ সভাপতি হিসাবে গভর্নিং বডির কমপক্ষে ৩৪টি সভায় বেআইনিভাবে সভাপতিত্ব করেন। প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি থেকে শুরু করে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার সংস্কার কাজে দুর্নীতির আশ্রয় নেন। ফলে সংস্কার কাজটিও যথাযথ হয়নি। তিনি অবৈধ প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে জেলা পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দ ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা (ভ্যাট বাদে) এবং প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা উত্তোলন করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হন।
এম এন ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মতছিনের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট এর সচিবের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত করে। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে মতছিন গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে ক্যাশ বইয়ে আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব সংরক্ষণ না হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনে ফখরুল আহমদ মতছিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের সিলেট কার্যালয়ের অনুসন্ধান প্রতিবেদন বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে দুদকের প্রতিবেদনে দায়মুক্তি প্রদান করায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের পুন:তদন্তের জন্য দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি আলহাজ আব্দুল গনি, সাবেক সদস্য মো. ফারুক মিয়া ও মো. সালাহ উদ্দিন, অভিভাবক মো. ছইদ আলী, মো. আজাদুর রহমান খান, মো. আব্দুস সালাম, মো. মবশ্বির আলী, মো. সাদ্দাম মিয়া, মো. হাসান আহমেদ, মো. আব্দুর রহিম ও রোহান আহমদ প্রমুখ।
দেশবার্তা/এনএইচবি