সারাদেশে গত মৌসুমে আলুর ব্যাপক ফলন হওয়ায় সারা বাংলাদেশে হিমাগারগুলো পরিপূর্ণ হয়ে স্থানীয় কৃষকদের হাতে পর্যান্ত আলু মজুত ছিল। যার কারণে কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু নামতে বিলম্ব হয়। ফলে এখনো সারাদেশের ৩৫৩টি হিমাগারে দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি আলু এখনো মজুত রয়েছে। ফলে এবার কেজি প্রতি ১২-১৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে আলু সংরক্ষনকারীদের।
এক তথ্যে জানা যায়, প্রতি কেজি আলু ক্রয় ও প্যাকেজিং, পরিবহন ও হিমাগার ভাড়াসহ ২৬-২৭ টাকা খরচ পরে। কিন্তু এবার হিমাগার থেকে নামিয়ে প্রতি কেজি আলু পাইকারি বিক্রয় হচ্ছে ১৩/১৪ টাকা দরে। এতে সংরক্ষনকারী কৃষক ও ব্যবসায়ীদেরকে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনের পরিচালক চন্দন কুমার সাহা বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে সচল ও চলমান ৩৫৩টি হিমাগার রয়েছে। এবার আলু সংরক্ষন হয়েছে সর্বমোট ৩২ লক্ষ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। আর ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের হিমাগার থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ৮ লক্ষ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মজুত আছে ২৩ লক্ষ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন।’
এবার আলুর ব্যাপক ফলন হওয়ায় সবগুলো হিমাগার পূর্ণ হয়ে কৃষকদের হাতে প্রচুর আলু ছিল। যার কারণে সংরক্ষিত আলু ব্যবসায়ী ও কৃষক ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এবার কৃষকদের লোকসানের কথা চিন্তা করে সরকার হিমাগার থেকে ২২ টাকা করে আলু ক্রয়ের ঘোষনা দিয়েছিল। এতে কৃষকদের মনে কিছুটা আশার আলো জেগেছিল। কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন তারা। এভাবে লোকসান হলে আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে কৃষকরা। ফলে আলু সংকটে পড়বে গোটা দেশ। হুমকির মুখে পড়বে হিমাগারগুলো। পাশাপাশি রাজস্ব হারাবে সরকার। বেড়ে যাবে বেকারের সংখ্যা। দেশের আলুর চাহিদা মিটাতে হতে হবে আমদানী নির্ভর।
তাই তিনি মনে করেন, সরকার এই আপদকলীন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে ভর্তুকি দিয়ে আলু চাষে উৎসাহিত করা এবং আলু চাষ অব্যাহত রাখা।
প্রতিনিধি/একে