চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলায় প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ৭৬০ কোটি টাকায় নতুন উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। লক্ষ্য, ২০২৯ সালের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা।
প্রকল্পের আওতায় কুমিরা ঘাট থেকে বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত ৫.৫ কিলোমিটার বাঁধের কাঠামোগত উন্নয়ন ও পুনর্বাসন, ফেরিঘাট সুরক্ষা, এবং চারটি পুরনো রেগুলেটর প্রতিস্থাপনের কাজ করা হবে। এতে সীতাকুন্ড-সন্দ্বীপ ফেরি সার্ভিসের টেকসইতা বৃদ্ধি পাবে এবং উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটের আশপাশ প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে গেলে সীতাকুন্ড-সন্দ্বীপ নৌসংযোগ ব্যাহত হয়, ফলে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী চলাচলে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবীরা বলেন, ফেরিঘাট বন্ধ হলে তাঁদের ব্যবসা, আয়ের উৎস ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যার প্রভাব পড়ে পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে।
কুমিরা-বাঁশবাড়িয়া এলাকার উপকূলীয় বাঁধ ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও অতিবৃষ্টির কারণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্ষা মৌসুম ও উচ্চ জোয়ারের সময় বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে বসতি, কৃষিজমি ও অবকাঠামো তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এতে রাস্তা ও জনপথের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (১) নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, বাঁধ ও ফেরিঘাট শক্তিশালীকরণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমবে, কৃষি ও ব্যবসা স্বাভাবিক থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কুমিরা ঘাট থেকে বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত উপকূলীয় বাঁধের কাঠামোগত উন্নয়ন ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে টেকসই ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিনিধি/একে