চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাইয়ের দুইদিন পর চালক মোহাম্মদ সাজ্জাদের (২৫) হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে গিয়ে জানা যায়, যাত্রী সেজে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রই এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটিয়েছে।
পুলিশের তথ্য মতে, রাঙামাটির বাসিন্দা সাইফুলের পরিকল্পনায় চক্রের সদস্য রমজান আলী ওরফে আক্কর, মো. হারুন, সুমন এবং আশরাফ কয়েকদিন আগে থেকেই ওত পেতে ছিল। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বটতলী এলাকা থেকে যাত্রী সেজে সাজ্জাদের সিএনজিটি ভাড়া নেয় চক্রের সদস্যরা। রাত পৌনে ৮টার দিকে কানু মাঝির ঘাটের বেড়িবাঁধ এলাকায় নুরুল হকের ফিশারি খামারের পাশে সিএনজিটি থামানো হয়। সেসময় তারা সাজ্জাদের মুখ চেপে ধরে প্রজেক্ট এলাকার ভেতরে নিয়ে যায়। পরে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে গলা কেটে ও শরীরে আঘাত করে তাকে পানিতে ফেলে দেয়।
পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে বরুমচড়া ইউনিয়নের কানু মাঝির হাট এলাকায় শঙ্খ নদীর পাড়ের একটি পুকুরপাড় থেকে সাজ্জাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাজ্জাদ উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও গ্রামের মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার পর নিহতের বাবা মো. নাছির ড্রাইভার (৫০) বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে সিসিটিভি ফুটেজ ও ঘটনাস্থলের আলামতের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ সংগ্রহ করে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টায় আনোয়ারা থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সোহানুর রহমান সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এই ঘটনায় জড়িত বরুমচড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রমজান আলী ওরফে আক্কর এবং একই এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হারুনকে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার মূলহোতা সাইফুলকে আগেই অন্য এক মামলায় চন্দনাইশ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, মূল হোতা সাইফুলের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার রমজান ও হারুন তাঁদের জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও তিনজনের নাম জানিয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ আরও জানায়, এর আগেও এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় যাত্রী সেজে চালকদের মুখে গামছা বেঁধে মারধর করে সিএনজি ছিনতাই করত। তাদের কর্মকাণ্ডের কয়েকটি ভিডিও পুলিশের হাতে এসেছে।