সৌদি আরবে কর্মরত কোটি কোটি প্রবাসী কর্মীদের জন্য একটি বড় সুসংবাদ এসেছে। দেশটির সরকার প্রথমবারের মতো বিদেশিদের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী পেনশন ও সঞ্চয় কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে, যা তাদের আর্থিক ভবিষ্যৎকে আরও সুরক্ষিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর সর্বশেষ আর্টিকেল আইভি কনসালটেশন প্রতিবেদনের থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ‘পাবলিক পেনশন অ্যান্ড সেভিংস প্রোগ্রাম’ নামে পরিচিত এই নতুন প্রকল্পের আওতায় প্রবাসী কর্মীরা এখন থেকে সৌদি নাগরিকদের মতোই তাদের উপার্জনের একটি অংশ সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন। এই উদ্যোগটি প্রবাসীদের ব্যক্তিগত সঞ্চয় বাড়ানোর পাশাপাশি সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আইএমএফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগের ফলে সৌদি আরব থেকে বিদেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে। তবে দেশের ভেতরেই একটি বড় অঙ্কের অর্থ সঞ্চালিত হবে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিদেশি শ্রমিকরা দেশে ১৪৪.২ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল পাঠিয়েছেন। নতুন এই কর্মসূচি সেই আর্থিক প্রবাহকে দেশের ভেতরেই ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
সৌদি আরবের সামাজিক বীমা ব্যবস্থায় বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ কর্মী নিবন্ধিত আছেন, যার মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশই বিদেশি প্রবাসী শ্রমিক।
এই বিপুলসংখ্যক কর্মীর জন্য পেনশন কর্মসূচি চালু হওয়া একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাংলাদেশি প্রবাসীরাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এটি একদিকে তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে নিজ দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহকেও স্থিতিশীল রাখবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই কর্মসূচি প্রবাসীদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি সৌদি আরবের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াতেও সহায়ক হবে।
সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিদেশি শ্রমিকরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৪৪.২ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। গত এক দশকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ পৌঁছেছে প্রায় ১.৪৩ ট্রিলিয়ন রিয়ালে।